এবার আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশি কিশোর সাদাত রহমান। ১৭ বছর বয়সী সাদাত নড়াইল আবদুল হাই সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। গতকাল শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের হেগে এ মালালা ইউসুফজাই অনলাইনে শিশুদের নোবেল নামে খ্যাত এই পুরস্কার সাদাত রহমানের হাতে তুলে দেন। এ বছর ৪২টি দেশের ১৪২ জন প্রতিযোগীর মধ্যে এক্সপার্ট কমিটি সাদাতকে নির্বাচন করেছে।
বর্তমান প্রযুক্তির বিশ্বের একটি বড় সমস্যা সাইবার বুলিং। বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীরাও রেহাই পাননি এর ফাঁদ থেকে। এর ভয়বহতার প্রমাণ পাওয়া যায় পিরোজপুরের দশম শ্রেণির ছাত্রী রুকাইয়া রূপার আত্মহত্যাইয়। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি নাড়া দেয় নড়াইলের সাদাত রহমানকে। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সে তার বন্ধুদের সহায়তায় ‘নড়াইল ভলেন্টিয়ারস’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন শুরু করে। এই সংগঠন বেসরকারি সংস্থা একশনএইডের ‘ইয়ুথ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০১৯’-এ বিজয়ী হয়ে তহবিল পায়। এই তহবিলের সাইবার অপরাধ থেকে কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষা করতে মাধ্যমে তারা ‘সাইবার টিনস’ মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে। ২০১৯ সালের ৯ই অক্টোবর এই এপসের যাত্রা শুরু হয়।সাইবার টিনসের মাধ্যমে ভুক্তভোগী কিশোর-কিশোরীর সাথে আইন প্রণোয়নকারীদের সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং তাকে আইনী সহয়তা ও মানসিক সাপোর্ট দেয়া হয়। প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিশোর-কিশোরী এই অ্যাপ ব্যবহার করছে। এই অ্যাপের মাধ্যেম ৬০টির বেশি অভিযোগের মীমাংসা হয়েছে এবং ৮ জন সাইবার অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত হয়েছে। বর্তমানে সাদাত ‘সেফ ইন্টারনেট, সেফ টিনএজার’ নামের একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। সে এবং তার বন্ধুরা ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্কুলে স্কুলে সেমিনার-কর্মশালা করছে। তারা প্রতিটি স্কুলে ‘ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ক্লাব’ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
সাদাতের সঙ্গে চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাওয়া অন্য দুজন হলো মেক্সিকোর ইভান্না ওরতেজা সেরেট ও আয়ারল্যান্ডের সিয়েনা ক্যাস্টেলন। ওই পুরস্কারের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু গত ২৯ অক্টোবর ওই তিন প্রতিযোগীর নাম ঘোষণা করেন।
সাদাত রহমানের এই উদ্যোগ বাংলাদেশ জয় করে ছড়িয়ে যাক পুরো বিশ্বে এই কামনায় করি।
ডেস্ক/জেবা