-->

গল্প: দরিদ্র রাখাল ও তার মা।


গল্প: দরিদ্র রাখাল ও তার মা।
লেখা: আব্দুল্লাহ,(বগুড়া)।

এক গ্রামে বাস করতো এক রাখাল বালক ও তার মা।তারা ছিল খুবিই দরিদ্র। অনেক কষ্টে চলতো তাদের ছোট্ট সংসার। রাখাল ছিলো পরিশ্রমী। ছোট হওয়া সত্বেও সবসময় মাকে সাহায্য সহযোগীতা করার চেষ্টা করতো। মা বনে কাঠ কুড়িয়ে কোনোরকম এ সংসার চালাতো। ধীরে ধীরে রাখাল কিছুটা বড় হলো সে অন্যের মহিষ মাঠে চরিয়ে কিছু টাকা উপার্জন করতো, যা দিয়ে সংসার চলছিল।
একদিন তার মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাখাল চিন্তায় পরে যায়।তার মার চিকিৎসা করাড়ও খরচ তার পক্ষে জোগানো সম্ভব হয়ে উঠেনা।তার পরে ও সে দিন রাত পরিশ্রম করতে থাকে মাকে সুস্থ করে তুলতে। 
একদিন মহিষ চড়িয়ে বাড়ি ফেরার পথে তার প্রচন্ড খিদে পায়। সে একটা জাম গাছের নিচে ছাঁয়ায় একটু বসে। হঠাৎ এক থোকা জাম নিচে পরে, সে ব্যাকুল হয়ে তা খেতে যায় কিন্তু তার মনে পরে হয়তো তার মা ও না খেয়ে আছে। তাই সে না ফল খেয়ে তা ঝুড়িতে নিয়ে নেয়। 
রাখাল ছিলো খুবই ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত ফলে উঠে দাঁড়াতেই পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। যখন জ্ঞান ফিরে সে দেখতে পায় গাছটি কথা বলছে!সে ভয় পেয়ে যায়,সাথে অবাকও হয়। কোনোরকম উঠে দৌড় দিতে যায়, তখনি গাছটি বলে উঠে, 'ওহে বালক কোথায় যাচ্ছো একটু শুনে যাও!'
রাখাল গুটি-গুটি পায় এগিয়ে আসে। গাছটি বলে, 'কি হয়েছে তোমার আমার ফল নিয়ে কোথায় যাচ্ছো তুমি?দেখে মনে হচ্ছে তুমি বড়ই ক্লান্ত, আমার ছায়ায় বসে ফল খেয়ে যাও।' জবাবে রাখাল বলে,'ফল গুলো আমি আমার মা এর জন্য নিয়েছি সে অনেক অসুস্থ, হয়তো ক্ষুধার্ত অবস্থায় আমার জন্য অপেক্ষা করছে।' তখন গাছ বলে, 'চিন্তা করোনা একটু বসো।' তারপর গাছ টা একটু নড়ে উঠে, অনেক ফল মাটিতে পরে বালক খুশি মনে তা তার মার জন্য কুঁড়িয়ে নেয়। এবং গাছটিকে ধন্যবাদ বলে বিদায় চায়। গাছ বলে একটু শুনো "ওই যে দেখো আমার নিচে ওই জায়গাটা একটু খুঁড়ো"।বালক খুঁড়ে দেখতে পায় সোনা ভর্তি একটি কলসি। বালক অবাক হয়। বৃক্ষ বলে " অনেকদিন আগের কথা তোমার মতো একটি বালক তার পরিশ্রমের টাকা ওখানে রেখে যায়,পরে তা নিয়ে যায় তার মার চিকিৎসার জন্য।একদিন পর ফিরে আসে বালকটি এবং আবার টাকাগুলো মাটিতে পুঁতে রেখে যায়।আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি আবার ফিরে এলে কেনো?"সে বলে "আমি আমার মাকে বাঁচাতে পারিনি মা মারা গিয়েছেন।আমি চাই তুমি এই স্বর্ণ গুলো কোনো সঠিক ব্যক্তিকে দিয়ে দিও।" এই বলে বালকটি বিদায় নেয়।পরে সে আর ফিরে আসেনি।আমি তাই যত্ন করে ওগুলো আগলিয়ে রেখেছিলাম সঠিক কাউকে দিবো বলে।তুমি সেই যোগ্য ব্যক্তি। যাও নিয়ে যাও এগুলো। মার চিকিৎসা করো। মাকে সুস্থ করে তোলো। বালকটি অশ্রু ভেজা চোখে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিদায় নেয় এবং মাকে সেই টাকা দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তোলে। এবং বাকি টাকা দিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়ায়।
গল্প: দরিদ্র রাখাল ও তার মা। গল্প: দরিদ্র রাখাল ও তার মা। Reviewed by সম্পাদক on শনিবার, জুন ১৩, ২০২০ Rating: 5
Blogger দ্বারা পরিচালিত.