আবদুল্লাহ,(বগুড়া):
প্রশান্তি বলতে বুঝায় আত্নার শান্তি বা পরিপূর্ন তৃপ্তিকে।মন যদি ভালো না থাকে যদি মনে প্রশান্তি না থাকে, তাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও সুন্দরতম জিনিস বা বিষয় ও অসুন্দর মনে হয়। চারপাশ বিস্বাদময় আর তৃক্ততায় ভরে উঠে।ভালো থাকার এই অনন্য হাতিয়ার অর্জনের জন্য অসাধ্য কোনো কাজ করতে হয় না,প্রশান্তি লুকিয়ে থাকে নিজেরই মাঝে।প্রশান্তি বিষয়টি পুরোপুরি নিজের উপরই নির্ভর করে।
শারিরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ সুন্দর তথা ভালো থাকার জন্য প্রশান্তি অনন্য এক হাতিয়ার।এই প্রশান্তি নিতান্তই নিজ নিজ মনের বিষয়।যা অর্থ সম্পদ দিয়ে কখনো লাভ করা যায়না।আমরা বর্তমানে নিজেদের প্রশান্তির চাহিদা গুলোকে বৃস্তিত করে ফেলেছি।ফলে আমরা শারিরিক ভাবে সুস্থ থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা মানসিক ভাবে এক প্রকার অসুস্থতাময় জীবন পরিচালনা করছি।
জীবনকে সুন্দর ও হাঁসি-খুশিময় করার জন্য মানসিক প্রশান্তির কোনো বিকল্প নেই।তাই সকলের উচিত মানসিক প্রশান্তি অর্জনের দিকে লক্ষ্য রাখা।কিছু ছোট ছোট কাজই পারে আমাদের অাত্নার তৃপ্তি মিটাতে,মনে প্রশান্তি যোগাতে।মনের প্রশান্তি লাভের জন্য সকলের কিছু বিষয় সম্পর্কে একটু সচেতন হতে হবে।
১-ইচ্ছা বা মনের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবেন না নিজের মানসিক প্রশান্তির জন্য কখনই মনের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করা উচিত নয়।নিজের ইচ্ছা বা মনের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করলে নিজের মনের কাছেই আপনি অপরাধী হয়ে থাকবেন। মনে তৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে ফলে মানসিক প্রশান্তি ব্যাহত হবে।
২-নিজেকে কখনই সকলের থেকে দুর্বল বা ছোট মনে করবেননা।এতে মনে বিষন্বতার সৃষ্টি হবে।এবং আপনি হতাশার অন্ধকার জগৎ এ নিজের অজান্তেই অগ্রসর হবেন। ফলে মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হয়ে যাবে আপনার।
৩-আপনি কোনো বিষয় এ অপারগ হলে কখোনই তা স্বীকার অর্থাৎ ‘না’ বা "আমি এই কাজটি জানিনা" বলতে ইতস্থত বোধ করবেন না। যে কাজ আপনি পারেননা সেই কাজ সংকোচ এর ভয়ে "হ্যাঁ" বললে আপনি নিজেই পরে সমস্যার সম্মুখীন হবেন।এবং নিজের মানসিক প্রশান্তি নষ্ট করে ফেলবেন।
৫-সবার সাথে স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে চেষ্টা করবেন।সবসময় কারো সাথে কোনো কথা বলার সময় একদম পরিষ্কার ভাবে সব কিছু বলবেন। আপনার যা ইচ্ছা,মতামত সকল বিষয় ভালো ভাবে স্পষ্ট করে বলে দিবেন।এর ফলে পরিবর্তিতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা সৃষ্টি হবেনা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা সৃষ্টির মাধ্যমে মানসিক শান্তি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
৬-কোনো কাজ বা বিষয় এ "হ্যাঁ" মতামত দেয়ার পূর্বে ভালো ভাবে চিন্তা করে নিন।কোনো বিষয় এ"হ্যাঁ" বলার সময় স্থির হয়ে ভেবে দেখুন আপনি ঝোঁকের বসে অথবা মানুষ কি বলবে? এই ভেবে সম্মতি জানাচ্ছেন নাকি আপনি মন থেকে "হ্যাঁ" মতামত জানাচ্ছেন।ঝোঁকের মাথায় কোনো কিছুতে রাজি হয়ে "হ্যাঁ" বলে ফেললে পরে এর জন্য পস্তাতে হবে।
৭-ব্যার্থতা মেনে নিতে মনক্ষুন্ন হবেননা বরং ব্যার্থতা থেকে অনুপ্রেরনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় কল্পনা মনের মাঝে সৃষ্টি করুন।
৮-অন্যদের খুঁশি গুলোকে গুরুত্ব দিতে শিখুন।অন্যদের মাঝে নিজেকে ভালো রাখতে শিখুন।তবে লক্ষ রাখবেন অন্যকে খুশি রাখতে গিয়ে নিজেকে কখনই অবহেলা করবেননা।অন্যদের খুঁশির জন্য নিজেকে ছোট বা অবহেলা করা উচিত না। কারণ এতে ধীরে ধীরে আপনি নিজেকে অনেক বেশি মূল্যহীন ভাবতে শুরু করবেন এবং নিজের মধ্যে বিষণ্ণতার অন্ধকার জগৎ এর প্রহর ডেকে আনবেন।ফলে অন্যকে খুঁশি তথা অন্যের মাঝে নিজেকে খুঁশি করার প্রচেষ্টায় নিজের মানসিক প্রশান্তি নষ্ট করে ফেলবেন।
৯-নিজের ইচ্ছে অনিচ্ছা সমূহ নিয়ে একান্তে চিন্তা করুন।আপনি কিসে আনন্দ পান কিসে মনক্ষুন্ন হোন তা ভেবে বের করুন এবং নিজের খুঁশি গুলোকে প্রাধান্য দিন।তহলে প্রশান্তি লাভ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।
১০-নিজের ভালো লাগা গুলোকে জটিল করে ফেলবেননা।নিজের ভালো লাগা-খুঁশি গুলোকে সহজলভ্য করে ফেলুন।এবং চাহিদা গুলো সীমাত করে ফেলুন।প্রশান্তি আপনা আপনি কাঠগড়ায় এসে দাড়াবে।
এসকল ছোট ছোট বিষয় আজ থেকে নিজের মধ্যে জাগ্রত করুন।তাহলে মানসিক প্রশান্তি অর্জন হয়ে উঠবে আরও সহজ ও সুন্দর।জীবন ভরে উঠবে প্রশান্তির শীতলতায়।
মনের প্রশান্তি পাবো কিভাবে?
Reviewed by সম্পাদক
on
বুধবার, এপ্রিল ০৮, ২০২০
Rating: