-->

করোনায় শিশু-কিশোরদের অবস্থান।


জেবা সামিহা তমা,(রংপুর):
বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে যুদ্ধ চলছে। তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ বলা যেতে পারে। তবে এ যুদ্ধটা মানুষের সাথে মানুষের সাথে নয়, মানবজাতির সাথে এক সংক্রামক ভাইরাসের যুদ্ধ। আমরা সবাই জানি বর্তমানে এই ভাইরাসটির নাম Covid 19। এছাড়াও করোনা নামে পরিচিত এই ভাইরাসটি বিশ্বে সকলের কাছে পরিচিত।
চিনের উহাই ও হুবেই থেকে উদ্ভব এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে পুরো পৃথিবীতে। চীনের বাহিরে বাংলাদেশ সহ ২০০ টি দেশে এখন পর্যন্ত ৭৮৫৮০৭ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৭৮২০ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুসারে ০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে ২ জন মারা গেছে। অর্থাৎ শিশু-কিশোরদেরও মৃত্যুহার কম। কিন্তু তাই বলে নিশ্চিতে থাকা যাবে না। সর্তক হতে হবে সব বয়সী মানুষদের।


যদি এখন চিন্তা করা হয় ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের থেকে অর্থাৎ বয়স্ক মানুষদের থেকে বেশি তাই তারা নিরাপদে আছে, এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত যাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। অতএব, জন্ম নেয়া বাচ্চা থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত যাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারাও বেশি মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে।
আচ্ছা এসব রোগ আমাদের অর্থাৎ যুবক/কিশোরদের আগে থেকে নেই থাকে তাহলে আমরা করোনায় আক্রান্ত হলেও আমাদের ভয় নেই, এটিও ভুল ধারণা। করোনা ভাইরাস সংক্রামক। হাঁচি, কাশি, আক্রান্ত স্পর্শ করা বস্তু স্পর্শ করলে অর্থাৎ করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যেকোনো সুস্থ ব্যক্তি আসলে সেও আক্রান্ত হবে যদি না সুরক্ষায় থাকে। এখন আক্রান্ত যুবক/কিশোর সঠিক চিকিৎসা না নিয়ে বাসায় সাধারণভাবে চলাফেরা করলে তার পরিবারের সবাই করোনায় আক্রান্ত হবে এবং বেশি ঝুঁকিতে থাকবে পরিবারের বয়স্ক মানুষ। তাই পরিবারের জন্যে হলেও নিজেদের আগে সুস্থ ও সাবধানে থাকতে হবে।
যেনো এই ভাইরাসটি সবার মধ্যে ছড়িয়ে যেতে না পারে তাই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রায় সবাই নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করছি এবং খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে কেউ বের হচ্ছিনা। সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কিছু ছাড়া প্রায় সব অফিস বন্ধ রয়েছে। যেহেতু আমরা প্রায় সবাই পড়াশোনা বা চাকুরির জন্যে একটা ব্যস্ত জিবনে অভ্যস্ত সেহেতু হঠাৎ ঘরে বন্দী কারোরই ভালো লাগার কথা না। কিন্তু তারপরেও অর্থাৎ অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমাদের নিজের এবং নিজের পরিবারের ভালো থাকার কথা ভেবে সাবধানে থাকতে হবে।

খুব কঠিন কোনো নিয়ম মানতে হবে না।
কিছুক্ষণ পর পর ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাহিরে বের হলে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লোভস অবশ্যই ব্যবহার করা। আর হাঁচি বা কাশির সময় অবশ্যই টিস্যু ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহৃত টিস্যু বন্ধ ঝুড়ির মধ্যে ফেলতে হবে। যদি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের যেতে হবে।

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা - করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া মানেই নিশ্চিত মৃত্যু নয়। অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন এবং সংখ্যায় এটি বেশি। নিজেরা সচেতন হয়ে নিয়ম অনুসারে জীবনযাপন করে জয় করি করোনার ভয়। এবং কোনো ভূয়া খবরে বিশ্বাস না করে সেগুলোকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে না ছড়ানোর দায়িত্বও কিন্তু আমাদের যুব সমাজের। যতটা সম্ভব নেতিবাচক খবর শেয়ার না করে ইতিবাচক খবর শেয়ার করতে হবে এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় সৃষ্টি হবে না।


করোনায় শিশু-কিশোরদের অবস্থান। করোনায় শিশু-কিশোরদের অবস্থান। Reviewed by সম্পাদক on মঙ্গলবার, মার্চ ৩১, ২০২০ Rating: 5
Blogger দ্বারা পরিচালিত.