বিশেষ প্রকাশনা:
আমার শিক্ষকতা জীবনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি এবং এখনও করি। আমি বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং করছি। সাম্প্রতিককালের একটি অর্জনকে কেন্দ্র করে আমার আজকের এ লেখা।
শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করি, বাবা, তোমাকে দেখছি ক্লাসে সব বুঝে বলতে পার, তাহলে শিক্ষার বিপণিবিতানে যাও কেন? উত্তরে বলে, স্যার, বাবা মা যেতে বলে, তাই। আমারতো আর নতুন শেখার নেই, তবু যেতে হয়। এছাড়াও বাড়িতে বদ্ধ থাকার চেয়ে বেড়িয়ে আসা ভালো লাগে ৷ অনেক শিক্ষার্থীর উত্তর এক ও অভিন্ন।
ঐসকল শিক্ষার্থীর অনেকের বাবা/মায়ের সাথে আমার সুসম্পর্ক আছে। তাঁদের সাথে কথা বলতে বলতে কথাচ্ছলে জিজ্ঞেস করি ,আপনার ছেলে পড়াশুনায় ভালো, তবে প্রাইভেট বা কোচিং এ পাঠান কেন?
আবার অনেক সময় অভিভাবক জিজ্ঞেস করে, স্যার, ছেলেটিকে কোথায় পড়তে দেবো? আমি সে ক্ষেত্রে পালটা প্রশ্ন করি, ছেলে কোন বিষয় বুঝতে পারছে না? কোনটি কঠিন মনে করছে? কোনটিতে দুর্বল?
অধিকাংশেরই একই উত্তর। সব পারে। কিন্তু বাড়িতে পড়তে চায় না।
আমি আবারও প্রশ্ন করি, সব পারলে পড়বে কেন? যা শিখে গেছে তা তো পড়তে চাইবে না? এটাই স্বাভাবিক। অজানাকে জানার আগ্রহ থাকবে ৷ জানাকে বারবার জানতে আগ্রহ থাকে না ৷ এজন্য পড়তে চায় না ৷
বাড়িতে থাকলে ঘোরাফেরা করতে চায় ৷ এ বাড়ি ও বাড়ির ছেলেমেয়েদের সাথে খেলতে যায় ৷ পড়তে চায় না ৷ এজন্য "চাপে রাখি"।
আমি শুধু ভাবি, শেখার জন্য পড়ালেখা নয়, চাপে রাখার জন্য পড়ালেখা। যারা শিক্ষার্থীকে যত বেশি চাপে রাখতে পারে, তারা অভিভাবকের কাছে তত ভালো শিক্ষক ৷ যে সন্তান মুখ বুঝে সহ্য করে , সে সুসন্তান ৷
ব্যতিক্রম নেই তা নয়, তবে সংখ্যায় নগণ্য।
অভিভাবকগণের চাহিদা "সন্তানদের চাপে রাখি",
সন্তানদের হাহাকার " চাপে আছি"।
একজন শিক্ষক তাঁর শিক্ষকতা জীবনের একটি ঘটনা বললেন ৷ তিনি এবং তাঁর প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ শিক্ষার্থীর বাসায় গেলেন ৷ ঐ বাসার দুই ছেলেমেয়েই তাঁর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ৷ সময়টা ছিল রাত ন'টার বেশি ৷ দুইজন স্যারকে পেয়ে বাবা মা উভয়েই খুব খুশি ৷ কোথায় বসাবে, কী খাওয়াবে এ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন ৷ অধ্যক্ষ স্যার বললেন, ব্যস্ত হবেন না ৷ আমি আপনার ছেলেমেয়ের খবর নিতে এসেছি ৷ আপনার ছেলে মেয়েকে একটু ডেকে দিন, কথা বলি ৷
দুইজনে স্যারকে সালাম দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল৷
স্যার ওদের বসতে বললেন ৷ ওরা বসল ৷ কেমন আছো ? লেখাপড়া কেমন করছ ? কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা শুনে নিলেন ৷ এখন কি করছিলে জানতে চাইলে জবাব দিল গণিত স্যার আমাদের পড়াচ্ছেন ৷ রাতে গণিত শিখছ ৷ রাতে মনোযোগ দিয়ে বাডির কাজ আত্মস্থ করবে। স্যারের কথা শুনে শিক্ষার্থীর বাবা বললেন , এ সময় ওরা পড়তে চায় না ৷ টি ভি সিরিয়াল দেখতে চায় ৷ এজন্য যাতে টি ভি দেখার সুযোগ না পায় , তাই গণিত স্যারের ব্যবস্থা করে দিয়েছি ৷ বাবার কথার পর ছাত্রটি কি যেন বলতে গিয়ে হঠাৎ থেমে গেল ৷ অধ্যক্ষ স্যার কিছু একটা যেন অনুমান করলেন ৷ স্যার একটু চিন্তা করেই অভিভাবককে বললেন , কিছু যদি মনে না করেন একটি কথা বলব ৷
বলেন স্যার , কিছু মনে করব কেন ?
বলছি আমি ওদের সাথে একটু আলাদা করে কথা বলতে চাই ৷
ঠিক আছে স্যার , আমি আসছি ৷ আপনারা কথা বলেন ৷
ছাত্রের বাবা চলে যাবার পর স্যার ছাত্রকে বললেন , তুমি কী যেন বলতে গিয়ে বলতে পারো নাই ৷ আমার মনে হয় বাবার ভয়ে বলো নাই ৷ ঠিক ধরতে পেরেছি কি ? ৷
ছাত্রটি হেসে ফেলল ৷ বলল, ঠিক ধরেছেন স্যার ৷
আচ্ছা এখন তোমাদের বাবা মা কেউ নাই ৷ তোমরা নির্ভয়ে বলতে পারো ৷
স্যার, এখন যিনি গণিত পড়াচ্ছেন , তার আগে অন্য একজন গণিত স্যার প্রত্যেক দিন পড়ান ৷
তাহলে আবার গণিত স্যার কেন ? উনি কি ভালো পড়াতে পারছেন না ? ওনার কাছে কি বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে ? এরকম হলে ঐ স্যারকে বাদ দিয়ে দাও ৷
না স্যার , উনি ভালো করে বুঝিয়ে পড়ান ৷ আমাদের বুঝতে কোনো অসুবিধা হয় না ৷
তবে আরো স্যার কেন ? তোমাদের বুঝতে পারা গণিত নতুন করে শিখতে ভালো লাগে ?
শেখা গণিত আবার শিখতে মোটেই ভালো লাগে না ৷ আমাদের ভালো না লাগলে কি হবে ৷ বাবা মার ভালো লাগে, তাই ৷
মানে! বুঝলাম না৷
এ সময় বাবা মা টি ভি তে সিরিয়াল দেখে ৷ আমাদের স্যারের কাছে আটকিয়ে রাখলে তাঁদের সিরিয়াল দেখতে সুবিধা হয় ৷ আমাদের সুবিধার জন্য স্যার নয় , বাবা মার সুবিধার জন্য স্যার ৷
বুঝেছি ৷ যাও পড় গিয়ে৷ তোমাদের স্যার বসে আছেন ৷ আর তোমাদের বাবাকে বলো আমার কথা শেষ হয়েছে ৷
বাবা চলে এলেন ৷ স্যার বললেন, এখন আমরা আসি ৷ ও হ্যাঁ, একটি কথা, ছেলে মেয়েদের একেবারেই টেলিভিশন দেখা বন্ধ না করাই ভালো ৷ তারাও কিছু অনুষ্ঠান দেখুক ৷ আর বেশি অসুবিধা মনে করলে ডিশ লাইন কেটে দিন ৷ এরপর স্যারেরা চলে গেলেন ৷
টি ভি দেখা বন্ধ করার জন্য কিংবা মাঠে খেলাধুলা বন্ধ করার জন্য অথবা বন্ধু বান্ধবের সাথে মেশা বা পাড়া পড়শি, আত্মীয় স্বজনদের সাথে মেশা বন্ধ করার জন্য ও নিজেদের সুবিধার জন্য প্রাইভেট স্যারের এ ব্যবস্থা চাপে রাখা ছাড়া অন্য কিছু নয়--এটি সহজেই অনুমেয়। পাঠকবৃন্দ, আপনাদের কী মনে হয়?
স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাগণ শেখানোর কাজে গুরত্ব বেশি দেন, একবার বিষয়টি বুঝতে পারলে শিক্ষার্থীরা অল্প পড়লেই আয়ত্বে আসে ৷ ফলে পড়ার টেবিলে বেশিক্ষণ পড়তে হয় না ৷
অভিভাবকগণ মনে করেন বিদ্যালয়ে চাপ নাই , এজন্য পড়ে না ৷ যে স্কুল বেশি চাপ দেয়, সেই স্কুল ততো ভালো ৷ শিক্ষকের মূলকাজ পড়া দিয়ে পড়া নেয়া নয় ৷ বুঝতে সহায়তা করা ৷ আগ্রহ সৃষ্টি করা।
শহরের অনেক স্কুল আছে ডাবল শিফটের ৷ প্রভাতী ও দিবা ৷ ভর্তি করানোর জন্য অধিকাংশ অভিভাবক চিন্তিত থাকেন ৷ ভর্তি করতে পারলেই খুশি ৷ কেউ প্রভাতী আবার কেউ দিবা শাখায় ভর্তি করান ৷ ভর্তি করার কিছুদিন যেতে না যেতেই প্রভাতী শাখায় পরিবর্তন করার জন্য দৌড় ঝাঁপ শুরু করেন ৷ এর কারণ খুঁজতে অনেক সময় লেগেছে ৷ প্রধান কারণ হিসাবে পেয়েছি সেটি হলো: সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লেখাপড়ায় ব্যস্ত রাখার সুযোগ বেশি ৷ সন্তান কতৃক বাবা মায়ের কাছে কোনো আবদার বা বিরক্ত করার সুযোগ থাকে না এবং সন্তানকে বাবা মা নিজ হাতে শিক্ষা দেয়া থেকে রক্ষা পান ৷ আর একটি বিষয় বিদ্যালয়ে আনা নেয়া, কোচিং বা প্রাইভেটে নিয়ে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকার সুযোগ হয় ৷ অনেক অভিভাবক সন্তানের চাহিদামত টাকা বা কোনোকিছু সরবরাহ করা সন্তানের প্রতি ভালোবাসা মনে করেন ৷
একটি উদাহরণ দিয়ে স্পষ্ট করতে চাই ৷ আমরা মুরগির মাংস অধিকাংশই পছন্দ করি ৷ খেতে বসে যদি শুনি ব্রয়লার এর মাংস- তখন অধিকাংশেরই আগ্রহ থাকে না ৷ দেশি মুরগির মাংস পছন্দ করি ৷ আমরা যারা এরকম মনে করি তাঁরা কি কখনও ভেবে দেখেছি এদের কীভাবে লালন পালন করে ৷ ব্রয়লারকে লালন পালন করার জন্য মালিক সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ৷ তাড়াতাড়ি বড় করে ৷ কষ্ট পাক এধরণের যে কোনো ব্যবস্থা থেকে দূরে রাখে ৷ এদের জন্য মায়া মমতা যেন উপচে পড়ে ৷ এত আদর যত্নে ও অতি দ্রুত বড় করলেও আমরা দেশি মুরগিকেই পছন্দ করি বেশি ৷ দেশি মুরগি অনাদর অবহেলায় পারিবারিক পরিবেশে বড় হয় ৷ ভালো মন্দ সব জায়গায় স্বাধীন ভাবে ঘুরে খাদ্য সংগ্রহ করে খেয়ে বড় হয় ৷ মালিক মাঝে মধ্যে খবর নেয় ও খাবার দেয় ৷ এরা ২৪ দিন ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায় ৷ স্নেহ মমতায় বাচ্চা বড় করে ৷ এভাবেই বড় হয় ৷ ব্রয়লারের বাচ্চা মাতৃস্নেহের পরশ পায় না ৷ স্বাধীন ভাবে বড় হয় না ৷ বদ্ধ ঘরে আরাম আয়েশে বড় হয় ৷ মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্ছিত ৷ কিন্তু দেশি মুরগির বাচ্চা মাতৃস্নেহের মধ্যে বড় হয় ৷ মায়ের কাছ থেকেই সবকিছু অর্জন করে ৷
সন্তানের শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা দেশি মুরগির স্থান থেকে দূরে থেকে মুনাফার চিন্তা করছি ৷ মাতৃস্নেহের পরশের শিক্ষা থেকে শিক্ষা না দিয়ে ,বদ্ধ ঘরে আবদ্ধ রেখে অন্যের দ্বারা খাইয়ে বড় করছি ৷ স্নেহের চাপ ও অন্যের চাপ এক নয় ৷ হয়ত অন্যের তত্বাবধানে নাদুসনুদুস ফলাফল হচ্ছে ৷ কিন্ত দেশি মুরগির মত দামি ও গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না ৷ মা বাবার চাপ স্নেহের চাপ ৷ তারা নিজে দায়িত্ব এড়িয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্যের চাপে নাদুসনুদুস করে গড়ে তুলছেন ৷
ভালো স্কুলে ভর্তি করার জন্য অভিভাবক সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন ৷ কাঙ্খিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার পর নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর ব্যাপারে আগ্রহ দেখান না ৷ আমার কাছে এর পক্ষে একাধিক কারণ আছে ৷ প্রথমত নামকরা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে পারলে সমাজে গর্ব করে বলতে পারেন আমার সন্তান অমুক বিদ্যালয়ে পড়ে ৷ এই গর্ব করার সুযোগটির জন্য ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করান ৷ দ্বিতীয়ত, প্রতিষ্ঠানটি অভিজাত শ্রেণির হলে নিজেকে অভিজাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন ৷ বিদ্যালয় ভালো বলতে প্রথমে যা আসা দরকার তা হচ্ছে শিক্ষক কেমন ? তার সন্তানকে যাঁরা পাঠদান করবেন তাদের যোগ্যতা কেমন ৷ আমার মনে হয় না শিক্ষক এর পাঠদান ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে তারা সন্তানকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করান ৷ অভিভাকগণ শিক্ষকের মাপিকাঠিতে ভর্তি করাতে আগ্রহী হলে যোগ্যশিক্ষক নিয়োগে আগ্রহী হতেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷
অনেকেই আছেন এক বছরের পড়ালেখা একমাসেই শেষ করাতে চান ৷ বাকি সময় শুধু রিভিশন দিবে ৷ সে রিভিশনও শিক্ষার্থীর ইচ্ছায় নয় , শিক্ষক বসিয়ে রেখে বা কোচিং এর মাধ্যমে ৷ সবার জানা একটি গল্প দিয়ে বিষয়টি তুলে ধরছি ৷ সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁস ও কৃষকের গল্প আমরা সবাই জানি। সেই গল্প থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা সবাই লোভী কৃষকের মত যেন হয়ে গেছি। আমরা মনে করছি যে ,ধান লাগিয়েই অনেক বেশি সার ও পানি দিলেই তিন মাসের পরিবর্তে সাত দিনেই ধান পাব। যত বেশি সার ও পানি দেই না কেন সাত দিনে ধান কাঁটা সম্ভব নয় ।আরও বেশি করে রাসায়নিক সার দিলে চারাগাছগুলোই মরে যাবে । তেমনি আমরা আমাদের সন্তানদের এত বেশি যত্ন ও ভালোবাসি যে তাদের বেশি করে কোচিং, তাদের জন্য অনেক বেশি খরচ করলে তাঁরা তাড়াতাড়ি সব শিখে যাবে, মনে করি। । তাদের শিক্ষার জন্য যথেষ্ট সময় ও বিশ্রামের প্রয়োজন। আমরা সেটা মানতে রাজি নই । ফলে সবসময় বলি , আমার ছেলেটা বা মেয়েটা মোটেই পড়তে চায় না ।এজন্য তাদের ওপর মানসিক চাপ দিতেই থাকি । তারাও আস্তে আস্তে বিগড়ে যায়। আমাদের এরূপ কাজের জন্য একসময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুরা স্বাধীন ও শক্তভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। এক বছরের পড়া একমাসে শেষ না করে ধাপে ধাপে গড়ে তোলার মানসিকতা আমাদের ধারণ করতে হবে । একদিনে সব সোনার ডিমের আশা করলে লোভী কৃষকের মত হতে পারে পরিণাম। তখন আর কোনো উপায় থাকবে না ৷
কবি ও অভিনেতা এ বি এম সোহেল রশিদ এর একটি কবিতায় পড়েছি
"কোচিং এর চাপ
পরীক্ষা-তো নয় বিদ্যাদেবীর অভিশাপ ৷"
তাঁর লেখার সাথে যুক্ত করা যায়, " বাবা মায়ের নিরিবিলি থাকার আবেগ ৷"
অভিভাবকের আকাঙ্খার প্রতিফলন তত্ত্বের নামই হচ্ছে 'চাপ তত্ত্ব'৷ তাঁরা মনে করেন সন্তানদের সামলানো কোনো ব্যাপারই না ৷ তাঁদের বিশ্বাস ,"যত চাপ তত লাভ"৷
লেখক- মো: শফিয়ার রহমান।
সহ: শিক্ষক,
রংপুর জিলা স্কুল,রংপুর।
"চাপতত্ব" : শফিয়ার রহমান।
Reviewed by সম্পাদক
on
রবিবার, জুলাই ২১, ২০১৯
Rating:
