মোঃ মোশফিকুর রহমান,(নীলফামারী):
হঠাৎ করেই ঠোলা কাসেমের ফোনটাতে টুংটাং শব্দ হতে থাকে! গ্রাম থেকে আবুল মামার ফোন। ফোনটা রিসিভ করতেই, ওপাশ হতে মামার কান্না! ভাগ্নে আমি 'তো শেষ।
- কি হয়েছে মামা, তুমি এভাবে কাঁদো কেন? কি হয়েছে আমাকে বলো!
শোন আমার ধান রাখার মাচাঘর (স্টোর রুম) হতে চার পাঁচ মন ধান চুরি হয়ে গেছে ভাগ্না।
- এতো চিন্তিত হচ্ছো কেন! হয়তো মামি প্রয়োজনে বিক্রি করেছেন, জিজ্ঞেস করনি?
-আর বলিসনা ভাগ্নে, তোর মামিই হলো আসল কালপিট! ও আমার সংস্যার ধ্বংস করতেই আমাকে বিয়ে করেছিল!
- তোমার কি মামিকে সন্দেহ হয়?
- শুধু তোর মামি 'না আমার ছেলেমেয়েও ওর মায়ের মতো হয়েছে! তুইতো শুনেছি প্রাইভেট ডিটেকটিভের কাজ করিস, তোকে আমার ধান চুরির রহস্যটা উৎঘাটন করতেই হবে!
কি বলো মামা, তোমার কি মাথা ঠিক আছে! আমি কত বড় ডিটেকটিভ জানো তুমি? গতমাসে আমি কলকাতায় গিয়ে বড় একটা রহস্য উদ্ঘাটন করে দিয়ে আসলাম! সামনের মাসে ব্যাংককে একটা কেস নিয়ে যাব। তোমার এই ছোট্ট কেস নিলে আমার মান-সম্মানের কি হবে বুঝতে পারছ!
-আর আমার এই রহস্য উৎঘাটন না করলে, তোর আর আমার মান-সম্মান এলাকায় থাকবে? সবাই বলাবলি করছে, আমার ভাগ্নে অনেক বড় গোয়েন্দা সে ধান চুরির রহস্য উদ্ঘাটন করছেনা কেন? নাকি আমরা যা শুনেছি সব ভুল!
বুঝেছি মামা, তুমি তোমার কেস যেভাবেই হোক আমার গলায় চাপায়ে দিবেই! ঠিক আছে আমি দু'দিন পরে আসছি, তুমি তৈরি থেকো।
ঠিক দু'দিন পরে, ঠোলা কাসেম তার হাব্বাজোব্বা কোটটা পরে, মাথায় পুরোনো হ্যাড পরে আসলো! হাতে একটা ম্যাগনেফাইং গ্লাস, আরও কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষার যন্ত্রপাতি। ঠোলা কাসেমকে দেখেই মামি ও মামাতো ভাই বোনের বুক দুরুদুরু করছে! কি জানি বিখ্যাত গোয়েন্দা কাকে যে চোর বানায়?
ঠোলা কাসেম একএক করে সবার ফিঙ্গার প্রিন্ট নিলো, মাচাঘরের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা করে মুখ নিরাশ করে চিন্তা করছে! উৎসুক সকলের চিন্তা আরও বেড়ে গেল! কিছুতেই যেন কিছুই মিলছেনা, এই শীতের দিনেও কাসেমের গা দিয়ে ঘাম ছুটছে! এমন একটা সাধারণ কেসের সমাধান দিতে না পারলে, সে কিসের ডিটেকটিভ। তাকে হয়তো এ পেশা ছেড়ে চিরদিনের জন্য অন্য পেশা বেচে নিতে হবে। ঠোলা কাসেম বারবার, সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরণ করছে।
হঠাতই ঠোলা কাসেমের চোখগুলো একটা ইঁদুরের গর্ত দেখতে পেল, মাঁচাঘরের ওই জায়গায় একটা বড় ফুটো! এবার কাসেমের মুখে হাসি ফুটে উঠল, ওই দেখ মামা ইঁদুরে তোমার ধান নিয়ে গেছে!
অণুগল্প: ধান চুরি'র রহস্য ।
Reviewed by সম্পাদক
on
শনিবার, জুন ২২, ২০১৯
Rating: