মিসবাহ সামাদ,(সিলেট):
"ফেসবুক"একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যার মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই মূহুর্তের মধ্যেই বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করা যায়,ছবি, ভিডিওসহ নিজেদের অবস্থান শেয়ার করা যায়।
এই জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহারের যেমন রয়েছে ইতিবাচক দিক তার উল্টো চিত্রও আছে আর তা হলো ফেসবুক আসক্তি বর্তমান তরুণ সমাজের বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই এতে আসক্ত।
এমনকি কর্মক্ষেত্রেও এর প্রভাব কম নয়,অনেকসময় দেখা যায় ৪/৫ জন এক যায়গায় বসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলাপ করছেন তাদের মধ্যে হঠাৎ কেউ মোবাইলে ফেসবুক ব্যাবহারে মহাব্যাস্ত যার ফলে ওনি কথাগুলো গুরুত্বসহকারে নিতে পারতেছেন না এবং ব্যাক্তি সিদ্বান্তহীনতায় ভোগেন।
বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের ফেসবুক আসক্তির কারণেই পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে কারণ তাদের নিজেদের পাঠ্যবই নিয়ে ব্যাস্ত থাকার সময়ে তারা ব্যাস্ত থাকে ফেসবুক নিয়ে।
যার ফলে পরবর্তীতে অনেক মেধাবী ছাত্রই হারিয়ে ফেলে তার প্রতিভা।
ছাত্র-ছাত্রীরা এভাবে ফেসবুক আসক্ত হয়ে পরলে ভবিষ্যতে হয়তোবা মেধাবীদের অকাল পরবে।
গত কয়েক বছরে এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হয়েছে। এ রকমই কিছু গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে এবং মনোবিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা আইএএনএস। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একাকিত্ব নিয়ে আমাদের সাধারণ ধারণা হচ্ছে বয়স হলে মানুষ একা হয়ে যায়। কিন্তু কম বয়সী কিশোর-কিশোরীরাও দিন দিন একা হয়ে যাচ্ছে ফেসবুকের কারণে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলছে। ফেসবুকে আসক্তির কারণে কিশোর-কিশোরীরা অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে একাকী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। আর এই একাকিত্ব থেকে বাড়ছে হতাশা। দীর্ঘদিনের হতাশা থেকে তারা হয়ে পড়ছে আত্মহত্যাপ্রবণ। দিল্লির ফরটিস হেলথ কেয়ার হাসপাতালের মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড বিহ্যাভিরিয়াল সায়েন্সেসের পরিচালক ডা. সামির পারিখ জানিয়েছেন, একাকিত্ব শারীরিক ও মানসিক দুদিক দিয়েই রোগীদের ক্ষতি করে। এরা আস্তে আস্তে সবার থেকে দূরে সরে যায় এবং তাদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে নয়াদিল্লির সরোজ সুপার স্পেশালিটি হসপিটালের কনসালটেন্ট ডা. সন্দীপ গোভিল বলেন, তনয় নামের ১৪ বছর বয়সী এক ছেলে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। ফেসবুকে সে এতটাই আসক্ত ছিল যে ফোন বন্ধ করে রাখলে সে অস্থির হয়ে পড়তো। আমরা তার এই ‘স্ক্রিন এডিকশন’-এর চিকিৎসা শুরু করি। তখন ব্যবস্থা নেয়া না হলে এই আসক্তি থেকে সে আরো বড় কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত হতে পারতো। ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো এবং ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া-লস অ্যাঞ্জেলেসের গবেষকরা বিষয়টি নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। সেখানে তারা উল্লেখ করেছেন, একাকিত্বের ফলে মস্তিষ্কে বিপজ্জনক সিগন্যাল পৌঁছায়। যার ফলে হোয়াইট ব্লাড সেলের উৎপাদন ব্যাহত করে। তাই একাকিত্ব থেকে শারীরিক অসুস্থতার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
ফেসবুক আসক্তি মাদকের আসক্তির মতোই ভয়াবহ তাই সকলের উচিৎ নিদিষ্ট মাত্রায় এর ব্যাবহার করা।
ফিচারঃফেসবুক আসক্তি।
Reviewed by সম্পাদক
on
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০১৯
Rating: