শিশু-কিশোর২৪.কম ডেস্ক:
চলচ্চিত্র বা সিনেমা দেখতে কার না ভাল লাগে।কিন্তু বর্তমানে কম বয়সীদের জন্য ভালো মানের চলচ্চিত্র খুব নগণ্য। আজ আমরা নিয়ে এসেছি শিশু-কিশোরদের উপযোগী মজার ৫টি চলচ্চিত্র নিয়ে। যেগুলো দেখে নিতে পারো-
১. দ্য রেড বেলুন
নাম শুনেই বুঝে ফেলেছ লাল রঙের এক বেলুন নিয়ে এই সিনেমার কাহিনী। প্যাসকেল নামের ছোট এক ছেলে স্কুলের যাবার পথে হঠাৎ আবিষ্কার করে ঢাউস এক লাল টুকটুকে গ্যাস বেলুন। প্যাসকেলের সাথে বেলুনটির কিন্তু ভারী বন্ধুত্ব হয়ে যায়, সারাক্ষণ বেলুনকে সাথে রাখা চাই-ই চাই তার। কিন্তু বাধ সাধে পাড়ার একদল দুষ্টু ছেলে, লাল রঙের বেলুন যেভাবেই হোক ছিনিয়ে নেবে তারা। এর পর কী হলো প্যাসকেল আর তার লাল বেলুনের? জানতে চাইলে কিন্তু দেখতে হবে দ্য রেড বেলুন।
ছবিটি নির্মিত হয় ১৯৫৬ সালে। ফরাসি ভাষায় নির্মিত এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন অ্যালবার্ট লামোরিসে। তবে ভাষার কারণে ভড়কানোর কিছু নেই, কথোপকথন আছে খুব সামান্য। বিখ্যাত এই সিনেমায় অর্জনের পাল্লা কিন্তু মস্ত বড়, জিতেছে অস্কার (চিত্রনাট্য), কান উৎসবের স্বর্ণ পাম-এর মত বাঘা বাঘা সব পুরষ্কার! এখনই বসে পড় এই মজার ফ্যান্টাসি সিনেমাটি দেখতে, সময় লাগবে মাত্র ৩৪ মিনিট।
হঠাৎ বাসার দোরঘণ্টা বেজে ওঠে, দরজা খুলতেই হাজির এক ফুটফুটে বাচ্চা। বাড়ির কর্তা বাচ্চাকে পেয়ে মহা খুশি, কিন্তু তার কাঁধে রাশি রাশি কাজ। চুপিচুপি তিনি সেই বাচ্চাকে রেখে আসেন পাশের বাসার সদর দরজায়। এমন ফুটফুটে এক বাচ্চাকে দেখলে সবারই মন গলে যায় মুহূর্তেই, কিন্তু নিজেদের সংসারে অজানা এক শিশুকে আপন করে নিতে তো দুনিয়ার হ্যাপা। সবার কাছে থেকে বিতারিত হয়ে শিশুটির ঠিকানা হয় ডাস্টবিন। তারপর?
তারপরের কাহিনী দেখতে বসে পড় টেলিভিশনের সামনে। এই ছোট্ট চলচ্চিত্রটি কিন্তু খুব বড় বার্তা দেয় আমাদের। আর তা হলো, প্রতিটি শিশুর জন্য চাই একটি পরিবার, চাই তার আপন পরিবেশে বেড়ে ওঠার অধিকার। কানাডার এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয় ১৯৭৯ সালে, ইউনিসেফের সহযোগিতায়। এই সিনেমার ঝুলিতেও কিন্তু আছে অস্কারের মতো সম্মাননা।
৩. দ্য ব্রেড অ্যান্ড অ্যালি
এক গলির সামনে দাঁড়িয়ে আছে ভীতসন্ত্রস্ত একটি ছেলে। তার হাতে অনেকখানি রুটি, সামনের সরু গলি পার হয়ে তাকে যেতে হবে বাসায়। কিন্তু পথ আগলে আছে ভীষণ ভয়ংকর এক কুকুর। সামনে গেলেই ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে আসে সে। নানা ফন্দি ফিকির করতে থাকে ছেলেটি, কিন্তু কোনো কাজেই আসে না। এক সময় সাহস করে কুকুরটির দিকে এগিয়ে যায় সে। তারপর? তারপরের কাহিনী জানতে হলে ১০ মিনিট সময় খরচ করে দেখে ফেলতে হবে এই চলচ্চিত্র।
বিখ্যাত ইরানিয়ান চলচ্চিত্র পরিচালক আব্বাস কিয়ারোস্তামীর প্রথম চলচ্চিত্র এটি। ১৯৭০ সালে মুক্তি পায় এই ইরানী চলচ্চিত্রটি।
৪. ফর দ্য বার্ডস
একদল দুষ্টু পাখি নিয়ে এই সিনেমা নির্মিত। ভারি হিংসুটে, একে অন্যের সাথে ঝগড়া করাই যাদের কাজ। বৈদ্যুতিক তারের লাইনে একে অন্যের সাথে ঝগড়া করতে করতেই হঠাৎ তাদের সামনে আসে আরেক পাখি। এবার তারা দল বেঁধে সেই পাখিকে জ্বালাতন শুরু করে। কিন্তু তার ফলও হাঁড়ে হাঁড়ে পেতে হয় এই দুষ্টু পাখির ঝাঁককে। কিভাবে? নিজেই দেখে ফেল তবে।
এই মজার স্বল্পদৈর্ঘ্য অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রটি বানিয়েছে পিক্সার। পিক্সারের নাম হয়তো তোমরা সবাই শুনেছ। টয় স্টোরি, ফাইন্ডিং নিমো, মনস্টার ইনকোরপোরেটের মতো দারুণ কিছু চলচ্চিত্র বানিয়েছে পিক্সার। পৃথিবীসুদ্ধ মানুষ তাই পিক্সারের কাজের ভীষণ ভক্ত। তাদের এই চলচ্চিত্রটিও জয় করেছে দর্শক-সমালোচকদের মন, সাথে জিতে নিয়েছে অস্কারসহ বহু পুরস্কার!
এবার আমাদের দেশের একটি চলচ্চিত্রের কথা বলা যাক। অ্যানিমেটেড এই চলচ্চিত্রের নাম আনসলভড স্টারস। বাংলাদেশি কার্টুনিস্ট মানিক ও রতন বানিয়েছেন এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক উৎসবে দেখানো হয়েছে আমাদের এই দেশি চলচ্চিত্রটি।
ছোট্ট এক ছেলে তার বাবাকে নিয়ে আকাশের তারার মাঝে বিভিন্ন ছবি আঁকে। কখনো সেই তারা দিয়ে দুজন তৈরি করে হাতি, কখনো ঘুড়ি। কিন্তু বাপ-বেটা সমস্যায় পড়ে যায় একঝাক তারা নিয়ে। সেখানে কোনোভাবেই কিছু মেলানো যাচ্ছে না! কিন্তু তারা চেষ্টা চালিয়েই যেতে থাকে। এভাবেই দিন যায়, ছেলেটি বড় হয়, পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় তার বাবা। অনেককাল পরে ছেলেটি তার তারার রহস্য সমাধান করে ফেলে, আর এ কাজে সাহায্য করে তার নিজের মেয়ে। কিন্তু কি সেই রহস্য? সমাধান পেতে ঝটপট দেখতে হবে আনসলভড স্টারস।
শিশু-কিশোরদের জন্য মজার কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।
Reviewed by সম্পাদক
on
বুধবার, মার্চ ২৭, ২০১৯
Rating: