শিশু-কিশোর২৪ডেস্ক:
সময়সীমা | 2 hours 29 minutes |
পরিচালক | সৃজিত মুখোপাধ্যায় |
অভিনেতা | যীশু সেনগুপ্ত,সারা সেনগুপ্ত,অঞ্জন দত্ত,শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় |
ছবির | Drama |
সমালোচক পর্যালোচনা
১.লেখা:রেশমী প্রামাণিক
দু্র্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। পাঁচদিন ধরে চলে। আলোর রোশনাই, নতুন জামা, নতুন জুতোয় পায়ে ফোস্কা, নতুন প্রেম, প্রথমবার অষ্টমীর অঞ্জলিতে শাড়ি আর পাঞ্জাবির প্রেম--- আসলে দুর্গাপুজো মানে এই সবটা। মুখ ঢেকে যাওয়া হোর্ডিংয়ের মাঝে কোথাও যেন আলাদা ভাবেই একলা হয়ে যাওয়া। পৃথিবীর যে প্রান্তেই পুজো হোক না কেন অঞ্জলি, ভোগ আর বিজয়ার মিষ্টিমুখ মিলিয়ে দেয় বাঙালি আত্মাকে। এই হল বাঙালির দুর্গাপুজোর সারকথা। এই পুজোর মধ্যে আছে প্রাণের যোগ। বছরে এই মাত্র একবার সবার সঙ্গে দেখা হওয়ার হেতু সম্পর্কগুলো নতুন ভাবে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে। থাকে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার স্টেজ রিহার্সাল।
জ্যৈষ্ঠের সন্ধ্যায় তিথি, নক্ষত্র ছাড়াই 'উমার' বোধন হল। গরমে কাশ ফুটলো। এতদিন শুধু গল্পই শুনে এসেছে। এই প্রথম উমা কলকাতার পুজো দেখল। 'মা'- এই শব্দের সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে পরিচয় হল। মা কেমন দেখতে হতে পারে, মায়ের ছোঁয়া কেমন হয় সেই সম্পর্কে একটা ধারনা পেল। আসলে উমা তো মাকে চিনেছে বাবার মধ্যে দিয়েই। বাবা আর মায়ের ভূমিকা একসঙ্গে পালন করেছেন গল্পের হিমাদ্রি ( যীশু সেনগুপ্ত)। সেই থেকে মাম্পি ( সারা) শুধু ছবিতেই মাকে চিনে এসেছে। গল্প শুনেছে দুর্গাপুজোতেই প্রেম হয়েছিল তার বাবা-মায়ের।
দু্র্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। পাঁচদিন ধরে চলে। আলোর রোশনাই, নতুন জামা, নতুন জুতোয় পায়ে ফোস্কা, নতুন প্রেম, প্রথমবার অষ্টমীর অঞ্জলিতে শাড়ি আর পাঞ্জাবির প্রেম--- আসলে দুর্গাপুজো মানে এই সবটা। মুখ ঢেকে যাওয়া হোর্ডিংয়ের মাঝে কোথাও যেন আলাদা ভাবেই একলা হয়ে যাওয়া। পৃথিবীর যে প্রান্তেই পুজো হোক না কেন অঞ্জলি, ভোগ আর বিজয়ার মিষ্টিমুখ মিলিয়ে দেয় বাঙালি আত্মাকে। এই হল বাঙালির দুর্গাপুজোর সারকথা। এই পুজোর মধ্যে আছে প্রাণের যোগ। বছরে এই মাত্র একবার সবার সঙ্গে দেখা হওয়ার হেতু সম্পর্কগুলো নতুন ভাবে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে। থাকে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার স্টেজ রিহার্সাল।
জ্যৈষ্ঠের সন্ধ্যায় তিথি, নক্ষত্র ছাড়াই 'উমার' বোধন হল। গরমে কাশ ফুটলো। এতদিন শুধু গল্পই শুনে এসেছে। এই প্রথম উমা কলকাতার পুজো দেখল। 'মা'- এই শব্দের সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে পরিচয় হল। মা কেমন দেখতে হতে পারে, মায়ের ছোঁয়া কেমন হয় সেই সম্পর্কে একটা ধারনা পেল। আসলে উমা তো মাকে চিনেছে বাবার মধ্যে দিয়েই। বাবা আর মায়ের ভূমিকা একসঙ্গে পালন করেছেন গল্পের হিমাদ্রি ( যীশু সেনগুপ্ত)। সেই থেকে মাম্পি ( সারা) শুধু ছবিতেই মাকে চিনে এসেছে। গল্প শুনেছে দুর্গাপুজোতেই প্রেম হয়েছিল তার বাবা-মায়ের।
কঠিন অসুখে আক্রান্ত উমা। তার হাতে সময় খুব অল্প। তাই বাবা হিমাদ্রী মেয়ের উইশ লিস্টে যা যা আবদার আছে সব মেটাতে চান। উমাকে কলকাতায় নিয়ে আসেন। একেবারে খাঁটি পুজোর আবহ তৈরি করতে চান। কারণ তিনি চান না মেয়ের কাছে কলকাতার পুজো নিয়ে কোনও খামতি থাকুক। সেইমতো পরিচালক ব্রম্ভানন্দ চক্রবর্তীকে ( অঞ্জন দত্ত) ভার দেন শ্যুটিং ছাড়া সিনেমা বানিয়ে দেওয়ার জন্য।। কলকাতার কিছু বিখ্যাত পুজো দেখানোর ব্যবস্থা করেন পরিচালক। উমার মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মেনকাকে ( শ্রাবন্তী) নির্বাচিত করেন। কাহিনীতে কিছু ট্যুইস্ট তো চাই। তাই থাকেন মহীতোষ সুরের ( অনির্বাণ ভট্টাচার্য) মতো মানুষেরা।
টেনশন আর চাপানউতোরের মধ্যে দিয়ে পুজো শুরু হল। উমার সামনে সাধ্যমত সকলে অভিনয়ের চেষ্টা করলেন। কিন্তু কোথাও গিয়ে তাল কাটলো। বাবা-মেয়ের সম্পর্ক তো চিরন্তন। কিন্তু তা যেন ঠিক দাগ কাটতে পারল না। আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হওয়ার মতো অনেক উপকরণ ছিল। তাও জমল কই। প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই সাদা এবং কালো উভয়ই থাকে। কিন্তু পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় বড় বেশি করে ধূসরে ফোকাস করেছেন। দর্শকাসনে তখন ২ ঘন্টা ২৯ মিনিট ধরে বসে থাকাটাও বেশ চাপের বলে মনে হয়। দ্বিতীয়ার্ধে দৈর্ঘ্য একটু কম হলেই বোধ হয় ভালো হত। এই সব কিছু নিয়ে কেমন যেন খাপছাড়া লাগে 'উমা'।
তবে এই সব কিছুর মধ্যেও এক ঝলক মুক্ত বাতাস নিয়ে আসে সারা সেনগুপ্ত। সর্বাঙ্গে তার সারল্যের ছোঁয়া। ভালো লাগে রুদ্রনীল ঘোষ, বাবুল সুপ্রিয়ের অভিনয়। আর বাবা যীশু তো একেবারেই যথাযথ। তাই তো বাবা-মেয়েকে আর আলাদা করে অভিনয় করতে হয় না। অল্প সময়ে মনে দাগ কেটে যায় অনির্বাণ ভট্টাচার্যের অভিনয়। সুর বাবুকে অসুরের রূপদানের চেষ্টা করলেও উমার ছোঁয়ায় তিনি পাল্টে যান। নবমীর রাতে উমা যখন মহীতোষের হাতে প্রসাদ তুলে দেয় সেই দৃশ্য বেশ কিছুদিন ফ্রেমবন্দী করে রাখবেন দর্শক। সুইজারল্যান্ড থেকে দেশপ্রিয় পার্ক-সুন্দর ভাবে ফ্রেমবন্দি করেছেন সৌমিক হালদার। বিশেষ ভাবে মনে ধরে অনুপম রায়ের কথায় সুরঙ্গনার কন্ঠে আলস্য গানটি।
ছোট্ট ইভানের মা নিকোল ওয়েলউড। যার জীবনের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত 'উমা'। ইভানের জন্য মা নকল খিস্টমাসের আয়োজন করেছিলেন। বরফ থেকে স্লেজগাড়ি সবই ছিল। কিন্তু তারপর ছোট্ট ইভান আর বেশিদিন মায়ের কাছে থাকতে পারেনি। নিকোল এখন প্রতিটি দিন নতুন আশা এবং অনুপ্রেরণায় বাঁচেন। এই সিনেমার গল্পে উমার কি হল আমরা জানতে পারি না। তবুও উমারা ফিরে আসুক বারবার। কানাডার পুঁচকে শহর সেন্ট জর্জের নিকোলের মতো অনুপ্রেরণায় বাঁচুক হিমাদ্রির মতো অসংখ্য বাবা-মায়েরা।
- ২. লেখা:স্টার গল্প
- প্রকৃতির অপ্রতুল যে ভাষা এবং সে সাথে শ্রুতি নির্ভর সময়ের নান্দনিক সিনেমা “উমা”। সিনেমাটির ঘটনাটি সত্য,পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকা পাষণ্ড রোগের কথন আর দামি চরিত্রের চিত্রায়ন থাকছে দর্শকদের জন্য। জীবন পরিক্রমায় গল্পটি মুল গল্প থেকে সরে এলেও পর্দায় এক ইচ্ছে পূরণের মানুষ “উমার” জন্য ছিল একমাত্র সত্য। কারন, এই সিনেমাটিতে আছে সময়ের মোহ, চরিত্রাভিনেতাদের কৌশল,ধর্মীয় মূল্যবোধ,প্রেম-বিয়ে, একক আর ভেঙ্গে যাওয়া পরিবারদের গল্প যা দেখছে এই নির্মম পৃথিবী। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টার সিনেমাটিতে ছিল রাম রাম জপ।
- সিনেমার গল্পটি লেখক ইভান লেভারচেজের লেখা একটি সত্য ঘটনার উপর যেখানে একজন ক্যানাডিয়ান বালক বড়দিন উদযাপনে বিভোর থাকে। এই সিনামাটিতে সারা সেনগুপ্ত যে “উমা” চরিত্রে অভিনয় করেছে সেও একই অসুখে ভুগছে এবং এমনটাই ইচ্ছে সে কলকাতার দুর্গাপূজায় যেতে ছায়।সিনেমাটির প্রকৃত শব্দ এখানে স্বপ্ন পূরণ,একজন সত্যিকার জীবনের ধারক আর একজন পর্দার বাহক।
- সিনামায় দুর্গাপূজার যে আনন্দ তা সম্পূর্ণ এপ্রিল মাসেও ছিল। দর্শকদের জন্য এক প্রকার মোহ হলেও এটা ছিল প্রধান কৌশল। নন্দিত চলচিত্র পরিচালক চরিত্রে অরক রায়, শব্দ এবং লাইট চরিত্রে ব্রাহ্মানান্দা চক্রবর্তী(অঞ্জন দত্ত), সুজন মুখারজি ভারুন ঘোষাল চরিত্রে যারা অভিনয় করেছেন তারা প্রত্যেকে উমার কাছে আক প্রকার প্রতিজ্ঞা বদ্ধ। একটি স্পর্শ কাতর গল্প যেখানে একজন বাবা তাঁর একমাত্র মৃত্যুমুখী মেয়ের জন্য সব ত্যাগ টুকু স্বীকার করে নেন সেখানে পরিচয় ঘটে মানবতার। উমার চেয়ে এখানে সম্পর্কই একটি নান্দনিক চিত্রায়ন। সিনেমাটিতে (মহিতোষ সুর) অনির্বাণ ভট্টাচার্য দুটি প্রধান চরিত্র।
- আমরা বিরতির পর এমন একটি চরিত্র দেখতে পাই যখন ব্রাহ্মানান্দা এবং মহিতোষ হিন্দু ধর্ম নিয়ে কথা বলার সময় ব্রাহ্মানান্দা এমন ভাবে সিগারেটের ধোয়া ছাড়ছিলেন ঠিক সে সময় অমিতাভ বচ্চনের সরকার সিনেমায় তাঁর চা খাওয়ার দৃশ্যটি দৃশ্যটি ভেসে ওঠে।
- পরিচালক এখানে কিছু দুরবদ্ধ দৃশ্য রেখেছেন। হিমাদ্রি সেনের সাথে উমার পরিচয় আরও হৃদয় গ্রাহী হতে পারতো। তারা দুজনই কথা বলে কলকাতার সংস্কৃতি আর পূজা নিয়ে। কিন্তু উমার মা আর ছেলে বন্ধু নিয়ে কথা হয় না।
- জীবনের তাগিদ বোঝার জন্য এই সিনেমাটি দর্শকদের আকর্ষণ করবে। অঞ্জন দত্তের সাথে মনোজ মিত্রের হাসপাতালের সাক্ষাতটা ছিল বেশ মর্মস্পর্শী। যখন মিত্র ছেলের কণ্ঠে কথা বলে ঐ দৃশ্যটি সবাইকে নাড়া দেয়। সিনেমাটিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে উমার উপস্থাপনা পর্দায় আরও কিছুক্ষণ থাকাটা আবশ্যক হতে পারতো।
মুভি রিভিউ: "উমা" বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখায়।- দেখে নিন দুটি রিভিউ।
Reviewed by সম্পাদক
on
সোমবার, অক্টোবর ১৫, ২০১৮
Rating:
