-->

গল্প- ভয়




আব্দুল্লাহ আল নোমান,(রংপুর):

আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি, এটা তখনকার ঘটনা।
আমি খুব ছোটবেলা থেকেই আমার নানাবাড়িতে থাকি।আমার শৈশবকালের প্রায় পুরো সময়টাই নানাবাড়িতে কেটেছে।
আমার নানার অনেকগুলো পুকুর আছে। পুকুরগুলো বাড়ি থেকে বেশ দূরে।
তাই পুকুর পাড়ে থাকার জন্য একটা ঘর আছে। ঘরটার দরজাটা ছিলো পূর্ব দিকে।
আর জানালার পাশ দিয়ে বড় পুকুরটার ওপাড়ের বটগাছটা দেখা যায়। আমি প্রায়ই নানুর সাথে গিয়ে পুকুর পাড়ের ওই ঘরটায় থাকতাম।
গভীর রাতে নানু বের হতো পুকুর গুলোর চারপাশ ভাল করে লাইট মেরে দেখার জন্য।কারণ, গ্রাম থেকে একটু জনমানবহীন জায়গায় হওয়ায়
চোরের উপদ্রব ছিলো।
৩ তারিখ ছিল বুধবার। নানু তাড়াতাড়ি করে তৈরি হচ্ছিল পুকুর পাড়ে যাওয়ার জন্য।
আমিও জেদ ধরলাম যাওয়ার জন্য। তাই নানু আর না করলো না। কারন ঘর যেহেতু আছে সমস্যা নাই।আমরা ৫ মিনিটে পৌঁছে গেলাম।
নানু আমাকে ঘরে বসিয়ে দিয়ে বের হলেন । আমি আসার সময় পুকুর পাড় থেকে একটা কদম কুঁড়িয়ে এনেছিলাম।
সেটা নিয়ে বিছানায় বসে খেলছিলাম আর জানালা দিয়ে দেখছিলাম নানু আসছে কি না।
আমার দৃষ্টি গিয়ে পড়লো বটগাছটার দিকে। আমি তাকিয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ।ওই সময় আমি গাছের নিচে সাদামতো কী একটা দেখতে পেলাম।
আমি ভাবলাম নানু মনে হয় ওনার চাদরটা রেখে গেছে।
আমি সাহস করে বের হলাম যে ওটা নিয়ে আসার জন্য না হলে উড়ে গিয়ে পুকুরে পড়তে পারে।কিন্তু আমি কিছুই পেলাম না সেখানে গিয়ে ।
আমি খুব ঘাবড়ে গেলাম। নানুও আসে পাশে ছিলো না।পরে একটু এগিয়ে গেলাম পাশেই ছিল পুকুরের ঘাট।
আমি দেখলাম একটা বড় সাদা মুরগির সাথে অনেকগুলো ছোট ছোট বাচ্চা পুকুর পাড়ে হাটাহাটি করছে। আমি নিচে নামতেই কোথায় যেন
মিলিয়ে গেল। আমি খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম তাই দৌড়ে গিয়ে পুকুর পাড়ে উঠলাম...।
আমি ঘরের দিকে ফিরে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে কাপড় কাঁচার শব্দ পেলাম।পিছনে তাকিয়ে দেখি একজন সাদা কাপড় পড়া মহিলা কাপড় কাচঁছে ।
আর একটা ছোট ছেলে গায়ে কিছুই ছিল না। সে দৌড়ে এসে আমার হাতটা টেনে পুকুরে নামানোর চেষ্টা করছিল। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। এর পর আর কিছু মনে নাই ।
যখন জ্ঞান ফেরে আমি দেখি আমার নানুর কোলে আর আমার গা ভেজা...।
পরে নানু আমাকে জিজ্ঞাসা করলো আমি ডাকতে ছিলাম তুই না শুনে পুকুরে ঝাপ দিলি কেন?
সকাল হতে হতে আমার খুব শরীর খারাপ হয়। তিন দিন বিছানায় পড়ে ছিলাম।
গল্প- ভয় গল্প- ভয় Reviewed by সম্পাদক on বুধবার, জুলাই ১৮, ২০১৮ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.