ঈশা আল মাহিয়ান,(রংপুর):
সবাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফুটবল নিয়ে ব্যস্ত।কিন্তু আমরা জানিই না আমাদের দেশের ফুটবল এর কি খবর। কতদূর এগলো আমাদের দেশটা।
আগামী মাসে এশিয়ান গেমস, এর পরের মাসেই সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ। দুইটা টুর্নামেন্টেই অংশগ্রহন করবে বাংলাদেশ ফুটবল টিম। কিন্তু ফুটবল প্রেমীদের মাঝে তেমন কোন উন্মাদনা নেই, নেই কোন আগ্রহ। সবার ধারনা, বাংলাদেশ আর কিসের ফুটবল খেলবে, তাদের র্যাংকিং ১৯৪? কিন্তু ভুটান বিপর্যয়ের পর ১৮ মাস বাংলাদেশের কোন ম্যাচ ছিল না। এসময় র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অবনতি হয়। বাংলাদেশে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে ১৯৮ তম পজিশনে স্থান পায়।
এই ১৮ মাস মাঠে জাতীয় দলের কোন খেলা ছিল না। বাফুফে হয়তো দূর্নীতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছিল উচ্চ পদস্থদের টাকার নেশায়। কিন্তু কিছু ক্লাবের নিঃস্বার্থ আচারনের কারনে আমরা পেয়েছি এক ঝাঁক ফুটবল শিল্পী।
আরামবাগ ফুটবল ক্লাব অন্যতম একটি নিঃস্বার্থ দল। অন্য ক্লাবগুলো যেখানে, ভুড়ি ভুড়ি বিদেশি স্ট্রাইকার খেলিয়ে দেশিদের সুযোগ দিচ্ছিল না। সেখানে আরামবাগ ছিল ব্যতিক্রম। তারা বিদেশীদের বাদ দিয়ে দেশের তরুন স্ট্রাইকারদের সুযোগ দিয়েছিল। আর তারই ফসল হিসেবে আমরা পেয়েছি জাফর, সুফিল, বিপলু, আব্দুল্লাহর মতো প্রতিভাবানদের।
তরফদার রুহুল আমিনের মতো নিঃস্বার্থবান ব্যাক্তির মাধ্যমে পরিচালিত সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের তরুন প্রতিভা অন্বেষণ করার কারনে আমরা রহমত মিয়ার মতো মানসম্মত একজন ক্রিয়েটিভ ফুলব্যাক পেয়েছি। সাইফ আমাদেরকে মতিন মিয়ার মতো অসাধারন স্কিলফুল সম্পন্ন ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ডার উপহার দিয়েছে। ভবিষ্যতে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব আমাদেরকে আরো আরো মানসম্পন্ন প্লেয়ার উপহার দিবে ইনশাআল্লাহ।
আপনারা যারা ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের বিগ ফ্যান অথচ দেশের ফুটবলকে দূর্নীতিগ্রস্থ বলে ঘৃনা করেন, তাদেরকে বলছি........
বোর্ড হয়তো দূর্নীতিগ্রস্থ কিন্তু খেলোয়াড়দের তো সমস্যা নাই। আগের থেকেও অনেক মানসম্পন্ন প্লেয়ার এসেছে দলে। ফরোয়ার্ড লাইনের প্লেয়াররা দুর্দান্ত স্পিডসম্পন্ন। স্পেশালি, জাফর ইকবাল তো অনেক স্পিডি। তার রয়েছে লং রেঞ্জ শটে গোল করার অভিজ্ঞতা। এছাড়াও সে ডান ও বাম পায়ে সমান তালে খেলতে পারে। তার ড্রিবলিং, পাসিং, হেডিং, ফিনিশিং এবিলিটি সবচেয়ে সেরা।
তাছাড়াও সুফিল, বিপলু, আব্দুল্লাহ, ফয়সাল মাহমুদ, নাবিব নেওয়াজ জীবন, শাখাওয়াত রনি, জামাল ভুঁইয়া, মামুনুল ইসলাম, মাসুক মিয়া জনি, টুটুল হোসেন বাদশা, তপু বর্মন, রহমত মিয়া, নুরুল নাইম ফয়সালরা পরিবর্তনশীল বাংলাদেশের কারিগর।
বাংলাদেশ ফুটবল আগের থেকেও অনেক গোছালো হয়েছে। খেলোয়াড়দের খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, চলাফেরাসহ সবকিছুতে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। চলছে ফুটবলারদের নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন। তাইতো, সবমিলিয়ে প্লেয়ারদের ফিটনেস হয়ে উঠেছে ম্যাচ উপোযোগী। কাতার, থাইল্যান্ড, আবারো কাতারে ক্যাম্প করার পর প্লেয়ারদের ফিটনেস নিয়ে কোচ, ম্যানেজমেন্ট সবাই সন্তুষ্ট। লাওসের বিপক্ষে শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করার মানসীকতা লক্ষ করা গেছে প্লেয়ারদের মাঝে। অন্যান্য প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতেও শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভালই লড়েছে বাংলাদেশ।
এশিয়ান গেমসে ফলাফল কতটুকু সন্তোষজনক হবে বলতে পারি না। তবে সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে সাফ চ্যাম্পিয়নশীপে এক নতুন বাংলাদেশ দেখবে জাতি। অন্তত গত দশকের চেয়েও সেরা খেলাটা দেখতে পাবেন এবার.........
তাই পরিবর্তনশীল নতুন বাংলাদেশ ফুটবল টিমকে দেখতে একবার হলেও মাঠে আসুন অথবা টিভির পর্দার সামনে বসুন।ভালোবাসুন দেশের ফুটবলটাকে।
জাফর, সুফিলদের শৈল্পিক বাংলাদেশকে দেখতে হলে আসুন মাঠে। দেখুন ওদের খেলা...... সাপোর্ট করুন প্রানের লাল সবুজকে।ভালবাসুন দেশের ফুটবলটাকে।ভালবাসুন দেশটাকে।
চলুন না ভালবাসি দেশের ফুটবলটাকে৷
Reviewed by সম্পাদক
on
রবিবার, জুলাই ২২, ২০১৮
Rating: