-->

গ্যাং এর গল্প


বিশেষ প্রতিনিধি: 

আমাদের চারপাশটা এখন গ্যাং দিয়ে ভরে গেছে । এই গ্যাং জিনিসটা কি ! এই গ্যাং আসলে করছে কারা ! এই গ্যাং জিনিসিটার কাজ কি ! আর মানুষ এটাকে দেখেই বা কেমন করে !  
গ্যাং নিয়ে একটা বিস্তর আলাপ নিয়ে কিছু কথোপকথন আপনাদের সাথে ।
চলুন গল্পে গল্পে গ্যাং সম্পর্কে জানি ।

শুরু করেই ফেলি , গ্যাং আসলে এক ধরনের গ্রুপকে বা বাংলায় যাকে দলও বোঝায় । যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কার্য-সম্পাদন করে থাকে । মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে গ্যাং তৈরি করে । প্রতিটি গ্যাং এ লিডার হিসেবে থাকে এক বা একের অধিক বড় ভাই ।
মনে করুন, ডালিমপাড়ার ২০ বছর বয়সী আরিফ । আরিফ ঢাকা-বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়েছে ২ বছর হল । আরিফ ছুটি পেয়ে যখন বাড়ি আসত তখন একটা জিনিস প্রায়ই লক্ষ করল ,তার আশ-পাশের ছোট ভাইরা একটু জীবন সম্পর্কে উদাসীন । ফল স্বরুপ তারা কোন ভালো বিশ্ব বিদ্যালয়ে চান্স পাচ্ছে না । তো আরিফ কি করল ! একটা গ্যাং তৈরি করল । গ্যাং এর নাম দিল ‘ ডি ইউ ড্রিমারস ‘ । আরিফ তার ছোট ভাইদের ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়ে পড়ার আনন্দ ও সেখানে পড়াতে মানুষ তাকে যে মূল্যায়ন করতে শুরু করে তা শেয়ার করে । তাছাড়া যারা সেখান থেকে পাশ করে বেড়িয়েছে তাদের বর্তমান বিলাশ বহুল জীবন যাপন সম্পর্কে আরিফ তাদের বলল।আরিফের পাড়ার ছোট ভাইদের মনে একটা স্বপ্ন জাগ্রত হয় ।তারা গ্যাং এ যোগদান দেয় এবং গ্যাং এ যোগদান দেওয়ার পর দেখা যায় সেখানে আরও বুয়েট,চুয়েট,রুয়েট,ঢামেক,রমেক ইত্যাদি নাম করা প্রতিষ্ঠানের ভাই আছেন ।যারা তাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গাইড লাইন দিয়ে যান ।
এই ধরনের গ্যাংকে বলা হয় সামাজিক গ্যাং ।
এখন আশা যাক তামাকপাড়ায়,
তামাকপাড়ার বড়ভাই মামুন । চায়ের দোকানে বসে থাকলেও চায়ের চেয়ে মদ,গাজা,ডাইল যত প্রকার নেশা আছে তার সবই চলে । মামুনেরও একটা গ্যাং আছে । তার গ্যাং এরও একটা গল্প বলি ।
জামিল ক্লাস টেনে পড়ে তখন । ব্যাগে বই খাতা শেষ কবে ছিল জানা নেই ।
জামিল মামুন ভাইয়ের আদর্শে মোটামোটি সব নেশাই আয়ত্ত করে ফেলেছে ক্লাশ টেনে । কিন্ত নেশার টাকা তো বাড়ি থেকে দেয় না । জামিলের সে বিষয়েও চিন্তা নেই মামুন ভাই তো আছেই তার গুরু ।
জামিল একদিন তার এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিল , তো তার চোখে পড়ে তারই ক্লাশের একজন একটা মেয়ের সাথে গল্প করতে করতে হেটে যাচ্ছে । জামিল গিয়ে তাদের আটকায় ।আটকিয়ে ভদ্র ঘরে সেই সহপাঠিকে সে বলে “তুই আমার এলাকায় মেয়ে নিয়া ঢুকছিস! তোর খবর খারাপ আছে যদি তুই কাল স্কুল ছুটির পর মাঠের কোণায় না আসিস । যা এখন ।“ সেই ছেলেটা যাওয়ার পর জামিল মামুন ভাইকে ফোন দেয় আর বলে সে নতুন মুরগি পাইছে । মামুন ভাই বলে , ‘ শোন কালকে তোক একটা চড় মারব আর ওরে তো হিসাব ছাড়া ।তারপর তোক আড়াই হাজার দিতে বলব আর ওরে আড়াই হাজার ।বুঝছিস তো হিসাবটা !’ জামিল বলে ‘হ্যা,ভাই।তা আবার কওয়া লাগে !’
পরদিন যেই কথা সেই কাজ । জামিল সেই ছেলেটিকে তার গ্যাং এর কয়েকটা ছেলে-পুলে নিয়ে ধরে মাঠের কোণায় । সেই ছেলে বারবার বলে তাকে সেখানে ধরে নিয়ে যাবার কারণ কি ! জামিল বারবার বলে ,ভাই এসে বিচার করবে । তারপর ,মামুন ভাই আসল । শুয়ারের মত লুক নিয়ে ।
মামুন ভাই এসে দুজনের কথা শুনল , তারপর সে বলল দু জনেই দোষী ।তারপর প্লান মাফিক মার আর ভ্যাট বসায় দিল । জামিল তো সাথে সাথেই টাকা বের করে দিল । আর ঐ ছেলেকে বলল কালকের মধ্যে যেন টাকা দেয় ।
তো কি বুঝলেন !
এই গ্যাং এর বড়ভাইরা তো নিজেরাই নিজেদের ঠিকমত চিনে । ভাইরাসের মত নষ্ট করে জামিলদের মত জীবন । পরে জামিলরা হয়ে উঠে শীর্ষ সন্ত্রাসী ।
তাই বলব ,এ সমাজে এমন একটা সামাজিক গ্যাং হোক ।যারা এই অসামাজিক শুকোর গুলোকে বিনাশ করবে ।


ছবি সূত্রঃ google

গ্যাং এর গল্প গ্যাং এর গল্প Reviewed by Md. Ahosan Habib Maruf on বুধবার, জুন ০৬, ২০১৮ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.